Header Ads

বরিশালে গ্রাম আদালত সচল করার দাবি ইউপি চেয়ারম্যানদের

 


প্রান্তিক মানুষের ন্যায়বিচার পাবার এক সময়কার ভরসার জায়গা দেশের গ্রাম আদালত। নানা অব্যবস্থাপনায় নিস্ক্রিয় হয়ে রয়েছে বরিশালের গ্রাম আদালতগুলো। এবার তা সচল করার দাবি তুলেছেন বরিশাল বিভাগের ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানরা।বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি)  বরিশালে গ্রাম আদালত সক্রিয়করণে স্থানীয় প্রশাসনের ভূমিকা ও করণীয় শীর্ষক এক সভায় এ দাবি জানান তারা।

 
সভায় জানানো হয়, গ্রাম আদালতের জরিমানা করার ক্ষমতা বাড়িয়ে সর্বোচ্চ ৩ লাখ টাকা করা হয়েছে। গ্রাম আদালত সর্বোচ্চ ৭৫ হাজার টাকা জরিমানা করতে পারতো। গতবছরের মার্চ থেকে এই নতুন আইন কার্যকরের পর গ্রাম আদালতের ঝুঁকছেন দরিদ্র মানুষ। গ্রাম আদালতের মাধ্যমে ন্যায়বিচারের ফলে দিনদিন মামলা দায়েরের পাশাপাশি নিষ্পত্তির সংখ্যাও বাড়ছে। একই সঙ্গে গ্রাম আদালতের ওপর আস্থা বাড়ছে মানুষের।
 
 
বরিশাল বিভাগের অধিকাংশ ইউনিয়নের আস্থার প্রতীক হয়ে উঠেছে এ গ্রাম আদালত। এক বছরে ইউপি চেয়ারম্যানদের আন্তরিক প্রচেষ্টায় এ আদালতের কার্যক্রমে গতি ফিরেছে। এই সময়ে বরিশাল বিভাগের ২৩৯ টি গ্রাম আদালতে ৫ হাজার ১৩৯ মামলা দায়ের হয়েছে। তার মধ্যে ৪ হাজার ৬৮৯ টি ঘটনা নিষ্পত্তি করা হয়েছে। সে হিসেবে নিস্পত্তির হার প্রায় ৯২ শতাংশ। একই সঙ্গে তিন হাজার ৩২০টি মামলার আদেশে ৭ কোটি ৮১ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
 
গ্রাম আদালতে মামলা করে গত ২২ জুলাই টাকা ফেরত পেয়েছেন বরগুনা সদর উপজেলার ঢালুয়া ইউনিয়নের ডালভাঙ্গা গ্রামের সেতারা বেগম। তিনি গত বছরের শুরুতে ২৫ হাজার টাকা ধার দিয়েছিলেন একই গ্রামের মনির হোসেনকে। কিন্তু টাকা ফেরত না দিয়ে সময় ক্ষেপণ করেন। এ নিয়ে সেতারা বেগম ওই বছরের ১৫ জুলাই মনিরের বিরুদ্ধে গ্রাম আদালতে মামলা করেন। আদালতের রায়ে তিনি টাকা ফিরে পেয়েছেন।
 
সেতারা বেগম বলেন, ‘কোর্টে মামলা করতে গেলে সময় লাগত, টাকা খরচ হতো। তাই চেয়ারম্যানের এখানে মামলা করি। মামলা দায়েরের মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যে চেয়ারম্যান টাকা তুলে দিসে।

গৌরনদীর আরেক সুবিধাভোগী আলো রানী ঘোষ জানান, তারা দরিদ্র মানুষ। গ্রাম আদালতের মাধ্যমে ন্যায়বিচার পেয়ে তারা খুশি। পুলিশ, আদালতের চক্কর ও অর্থ অপচয় থেকে মুক্তি পেয়েছেন।
 

বৃহস্পতিবার দিন ব্যাপী এই সম্মেলনে স্থানীয় সরকার বিভাগের অতিরিক্ত সচিব একেএম তারিকুল আলম, বিভাগীয় কমিশনার মো. রায়হান কাওছার, বরিশাল রেঞ্জের ডিআইজি মো. মঞ্জুর মোর্শেদ আলম, স্থানীয় সরকার বরিশাল বিভাগের পরিচালক খোন্দকার আনোয়ার হোসেন, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন সন্মেলনে বক্তব্য রাখেন।
 
সন্মেলনে ৮৪জন ইউপি চেয়ারম্যান অংশ গ্রহন করেন। তারা গ্রাম আদালত পরিচালনার প্রতিবন্ধকতার কথা তুলে ধরেন।
 
গ্রাম আদালত আইন অনুযায়ী, ছোটখাটো ফৌজদারি ও দেওয়ানি বিরোধ স্থানীয়ভাবে মীমাংসার জন্য ইউনিয়ন পরিষদে গ্রাম আদালত গঠিত হয়। এই আদালত সর্বোচ্চ ৩ লাখ টাকা মূল্যমানের বিরোধ নিষ্পত্তি করতে পারেন। চুরি, ঝগড়া, প্রতারণা, ভয়ভীতি দেখানো, নারীকে অমর্যাদা করা, পাওনা টাকা আদায়, গবাদিপশুর ক্ষতির মতো বিরোধের নিষ্পত্তি গ্রাম আদালত করতে পারেন।

Powered by Blogger.